
পুরনো ও নতুন ধারার কোর্সে দিশা দেখাচ্ছে এসএনইউ | ডঃ ধ্রুবজ্যোতি চট্টোপাধ্যায়, উপাচার্য, সিস্টার নিবেদিতা ইউনিভার্সিটি
প্রথাগত ও অপ্রথাগত—দুই ধরনের কোর্সেই বর্তমানে কেরিয়ার গড়ার ব্যাপক সুযোগ রয়েছে বর্তমান যুগে। তবে
পুরোটাই নির্ভর করছে নিজের আগ্রহ, দক্ষতা ও আকাঙ্ক্ষার ওপর। প্রথাগত কোর্সের মধ্যে রয়েছে ইঞ্জিনিয়ারিং,
মেডিক্যাল, আইন এবং বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের মতো বিষয়গুলি। দীর্ঘদিন ধরেই এই বিষয়গুলি পড়ুয়াদের কাছে
স্থিতিশীল এবং সুপ্রতিষ্ঠিত কেরিয়ারের রাস্তা হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে।
এই ধরনের বিষয়ে পড়াশোনা করে কেরিয়ার গড়লে নির্ধারিত রাস্তাতেই এগিয়ে চলে জীবন, বেতনের পরিমাণও বেশ ভাল এবং
চাকরিক্ষেত্রে নিরাপত্তাও অনেক বেশি। উদাহরণস্বরূপ, প্রযুক্তি, নির্মাণ ও উৎপাদনশিল্পে ইঞ্জিনিয়ারদের যেমন
ব্যাপক চাহিদা রয়েছে তেমনই মেডিক্যালের ক্ষেত্রে চিকিৎসক ও নার্সরা অপরিহার্য। আইন নিয়ে পাশ করলে আদালত,
কর্পোরেট আইন অথবা সরকারি পরিষেবায় কাজের সুযোগ রয়েছে। এই ক্ষেত্রগুলি দীর্ঘদিন ধরেই কেরিয়ারের ক্ষেত্রে
নির্ভরযোগ্য।
কিন্তু বর্তমানে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পাচ্ছে তুলনামূলক ভাবে অপ্রথাগত কোর্সগুলি। এই ধরনের বিষয়গুলি নিয়ে পড়ার
জন্য ক্রমশ লাইন বাড়ছে উৎসুক পড়ুয়াদের। ডেটা সায়েন্স, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স, ডিজিটাল মার্কেটিং,
কনটেন্ট ক্রিয়েশনের মতো বিষয়গুলি নিয়ে কেরিয়ার গড়তে অনেকেই আগ্রহী। তার অন্যতম কারণ বর্তমান সমাজে এই
বিষয়গুলি অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক।
এই ধরনের বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করলে প্রযুক্তি সংস্থা, স্টার্টআপ, গবেষণাক্ষেত্রে চাকরির সুযোগ রয়েছে। যেমন,
ডেটা সায়েন্টিস্টরা বিভিন্ন খাতে তথ্য বিশ্লেষণ করে অন্যদের ব্যবসায়িক সিদ্ধান্তে সহায়তা করেন। ডিজিটাল
মার্কেটিং নিয়ে পড়াশোনা করে কোনও এক সংস্থাকে সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে বা অনলাইনে দূরদুরান্ত পর্যন্ত পৌঁছে
দেওয়া যায়। সেখান থেকেও আয়ের সুযোগ থাকে।
এছাড়াও, পরিবেশ বিজ্ঞান, সাস্টেনেবল ডেভেলপমেন্ট এবং রিনিউয়েবল এনার্জির মতো অপ্রথাগত কোর্সগুলিও বর্তমানে
অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। পাশাপাশি, আর্টস, ডিজাইন ও সাংবাদিকতার মতো বিষয়ও বর্তমানে পড়ুয়াদের
মধ্যে অত্যন্ত জনপ্রিয়। গ্রাফিক ডিজাইন, অ্যানিমেশন, সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্ট নিয়ে কেরিয়ার গড়তে
পারলে তা একদিকে যেমন সৃজনশীল, অন্যদিকে আর্থিক ভাবেও উন্নত।
ডিজিটাল মিডিয়ার যুগে কনটেন্ট ক্রিয়েটর, ইনফ্লুয়েন্সার ও অনলাইন কোচিংয়ের চাহিদা বৃদ্ধি পেতে থাকায় এই
ধরনের বিষয়গুলি আরও আকর্ষণীয় হয়ে উঠছে। প্রথাগত কেরিয়ারে গোটা রাস্তাটা একপ্রকার জেনেই যান সকলে। কখন
কীভাবে এগোতে হবে পুরোটা জেনে নিয়েই সেইমতো পড়াশোনা করেন।
অপ্রথাগত কোর্সগুলির আরও একটি বড় সুবিধা রয়েছে। একদিকে যেমন এই বিষয়গুলি পড়ে নিজের আগ্রহ মেটানো যায়,
অন্যদিকে নিজের প্রতিভা বিকাশেরও সুযোগ থাকে। তবে সফল কেরিয়ার গড়তে হলে পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাওয়ানো,
নিজের দক্ষতাকে ক্রমশ উন্নত করার ক্ষমতা থাকাটা অত্যন্ত জরুরি।
প্রথাগত ও অপ্রথাগত উভয় ধরনের কোর্সই নিজ নিজ ক্ষেত্র অনুযায়ী সুবিধাজনক। কোন বিষয় নিয়ে কেরিয়ার গড়তে হবে
তা নির্ভর করে আগ্রহ, প্রবণতা ও আধুনিক কেরিয়ার চিত্রের ওপর। সাফল্যের মূলমন্ত্র একটাই, নিজের প্যাশন বুঝে
সুযোগের সঙ্গে সঠিকভাবে মিলিয়ে নেওয়া।